রাজারহাটে আবারও পানিবন্ধি মানুষের দূর্ভোগ

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি, ইব্রাহিম আলম সবুজ, ১১ জুলাই, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : আবারও ভারী বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা ও ধরলা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারনে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা, বিদ্যানন্দ, নাজিমখাঁন ও ছিনাই ইউনিয়নের নদী পার্শ্ববর্তী গ্রাম সহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে পরেছে। চরম দূর্ভোগে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে পানিবন্দী মানুষগুলোর।

জানা যায়, অতিবৃষ্টি ও তীব্র গতিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা ও ধরলা নদীতে প্রতি মহুর্তে পানি বাড়ছে। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির কারনে রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের বিদ্যানন্দ, চরবিদ্যানন্দ, গাবুরহেলান, তৈয়বখাঁ, রামহরি, চতুরা, রতি মৌজা, ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের চরখিতাবখাঁ, নাখেন্দা, সরিষাবাড়ি, বুড়িরহাট, চর গতিয়াশাম মৌজা, নাজিমখাঁন ইউনিয়নের সোমনারায়ন ও হাসারপাড় মৌজা এবং ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধির কারনে ছিনাই ইউনিয়নের জয়কুমোর, কালুয়ারচর, কিং ছিনাই মৌজার হাজার হাজার একর ফসলী জমি পানির নীচে ডুবে গেছে।

গত দু’দিনে এসব গ্রামের অধিকাংশ বাড়িঘর বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় প্রায় ১৫হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর দিনাতিপাত করছেন। এসব এলাকার রোপা-আমনের বীজ তলা গুলোর অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে। গবাদি পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দি মানুষজন। গ্রামগঞ্জের অধিকাংশ কাঁচা রাস্তা গুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরেছে। এছাড়া বন্যা কবলিত এলাকায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। লোকজন আশ্রয়ন কেন্দ্র, উচু জায়গা ও রাস্তায় আশ্রয় নিচ্ছেন। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভেসে গেছে তিন শতাধিক পুকুর ও বিলের মাছ।

শনিবার দুপুরে সরেজমিন তিস্তা নদীর পানির নিচে ডুবে যাওয়া চরখতিবখাঁ গ্রামের সফিকুল (৫৫) নজরুল ইসলাম (৬৫) ও আব্দুর রহমান (৪২) জানান,কাজ-কর্ম বন্ধ হওয়ায় এবং হাট-বাজার যেতে না পারায় খাদ্য কষ্টে ভূগছেন তারা। চরবিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রমহান আলী (৬০) জানান,“চৌকি ধরনার সাথে বান্ধিয়া ছাওয়া-পোয়া,বউ-বাচ্চা নিয়ে উপর‌্যা থাকি,খাওয়া-দাওয়াও হবার ন্যাগছে না”। স্থানীয় যুবলীগ নেতা আব্দুল জানান জানান, চরা লগুলোতে শুকনো জায়গা না থাকায় গবাদি পশু নিয়ে বিপদে পড়েছে বর্নাত্য মানুষজন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাজিবুল করিম জানান,রবিবার উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরী সভা আহবান করেছি,সভার সিদ্ধান্ত এবং বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কুড়িগ্রাম পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফুল ইসলাম জানান, ধরলার পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপরে এবং তিস্তার নদীর পানি বিপদ সীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভাঙ্গন প্রতিরোধে কয়েকটি স্থানে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হলেও পানি বৃদ্ধির কারনে তা বন্ধ রয়েছে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *