মেয়র আবদুল কাদের মির্জা সংবাদ সম্মেলনে যে সব কথা বললেন

নোয়াখালী প্রতিনিধি, লূংফুল হায়দার চৌধুরী, ২২ জানুয়ারি, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বির”দ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মানহানি মামলার আবেদনের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রূপালী চত্ত্বরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আবদুল কাদের মির্জা। এর আগে বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নোয়াখালীর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ২নং আমলি আদালতে এই মানহানি মামলার আবেদন করা হয়। মামলার বাদী অশ্বদিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং ইউপি সদস্য মো. রিয়াজ উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি।

এসময় জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেন, একরাম সাহেব (নোয়াখালী ৪ আসনের সাংসদ), জেহান সাহেব, রাজনীতি এখনও বুঝেন না শিখেননি। টাকা পয়সা আছে তো অনেক বানিয়েছেন। মানুষের থেকে লুট করে। যাদের নাম কখনো শুনিনি। জেহান (সদর উপজেলা চেয়ারম্যান) সাহেব, উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছেন, কোথায় পেয়েছেন এত টাকা?

তিনি বলেন, আমাদের মামলার ভয় দেখাবেন না, মওদুদ সাহেবের ১৮টা মামলা, ফেইস করিনি? প্রথম মামলা ছাত্র শিবিরের অফিস ভাঙ্গার মামলা, তখনও এখানকার নেতারা জড়িত ছিলো। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে আন্দোলনরত অবস্থায় রাজপথ থেকে গ্রেপ্তার হয়েছি। আমাদের মামলার ভয় দেখান? জেলের ভয় দেখান? লাভ হবে না। তিনি বলেন, হিতে বিপরীত হবে।

এসময় তিনি মানহানী মামলার আবেদনকারীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সে কে? সে হলো মাদক, নারী কেলেঙ্কারী মামলার আসামি। ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হয়েছে। তারপরে নারী নিয়ে ব্যবসা করার সময় বেগমগঞ্জে ধরা পড়েছে। এই কুলাঙ্গারের কথা লজ্জা হয় বলতে। তিনি বলেন অশ্বদিয়া থেকে, নোয়াখালী থেকে জানিয়েছে-এই ছেলে রাতে আমার বোনদের এইসব নেতাদের হাতে তুলে দেয়।

শুনেন, বাদীর ভাই সিন্দুলপুরে ডাকাতির ঘটনায় গণপিটুনীতে মারা যায়। সাংবাদিক ভাইরা জনেন না? মিথ্যা কথা বলছি? আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, একটা নয় শত মামলা করেন। আমি আইনের কাঠগড়ায় দাড়াবো। অপরাধী হলে আমার বিচার হবে। আর আপনাদের বিচার গণআদালতে হবে সেদিন বেশি দূরে নয়। অপেক্ষা কর”ন। একরাম চৌধুরী সাহেব, লজ্জা হয় না? ৯৬ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনের সময়, আমাদের এখানে দেতলায় অফিস ছিলো, একটা খাটিয়া ছিলো, সে খাটিয়ায় আমি শুয়ে ছিলাম, আপনার রাজনীতির উত্থানের কথা বলছি।

আপনি সেখানে গিয়ে আমাকে বললেন, মির্জা ভাই নির্বাচনের খবর কী? আমি শুয়ে আছি। আমার পায়ের নিচে বসে এ কথা বরেছেন। মিথ্যা বললে উপরে আল্লাহ আছেন। পোস্টার দিয়েছেন, নিচে লেখা আছে- সৌজন্যে একরামুল করিম চৌধুরী, সুন্দলপুর। আপনার তখন নিজের কোনো পরিচয় ছিলো না। এইতো সেদিন। পোস্টার দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের সাহেবের নির্বাচনে। লজ্জা হয়না। টেন্ডার বানিজ্য, চাকরী বানিজ্য, লজ্জা হয় না? কষ্ট হয়। আপনি নেতা। এমপি হয়েছেন! আল্লাহ আপনাকে আরও বড় কর”ক। যদি ভালো হন।

মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেন, আবদুল কাদের মির্জার বক্তব্যের কারণে ভাঙ্গা উপজেলার এমপি নিক্সন চৌধুরী নোয়াখালী জেলা সম্পর্কে কুর”চিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। শুধু তাই নয়। তিনি তার রাজনৈতিক বক্তব্য প্রদানকালে মোয়াজ্জিন আযান দিলে তখন তিনি বলেছেন যে, আযান ১০ মিনিট পরে দিলেও চলত। এতে আমি একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে মনে করি, তিনি এই মন্তব্য করে পুরো ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের উপর তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। তার এই একাধিক কুর”চিপূর্ণ এবং মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করায় স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী এবং স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যানের মানহানি হওয়ায় এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হওয়ায় আমি বাংলাদেশ যুবলীগের একজন নিবেদিত কর্মী হিসেবে আমার হৃদয়ে আঘাত হওয়ায় তাঁর বির”দ্ধে অত্র মামলা দায়ের করলাম।

তবে এই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এখনো কোনো আদেশ দেননি। এর আগে বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খানের সভাপতিত্বে ও পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আজম পাশা চৌধুরী র”মেলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরী প্রমূখ। বিকেল ৫টায় বসুরহাট বাজারে এই বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *