ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, একরামুল হক, ২৬ জুন, ২০২০ বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ঘাঘট, যমুনা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে ।  তবে এখনো ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ঘাঘট, কাটাখালী ও যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বাড়ার সাথে সুন্দরগঞ্জ ও সাঘাটার ভরতখালীতে নদী ভাঙনও বেড়ে গেছে। গতকাল জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন ফুলছড়ি উপজেলার রতনপুর হইতে বালাসী ঘাট পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চলমান সংস্কার  কাজ  পরিদর্শন করেন ।

জেলার ৩৩ টি পয়েন্টে নদী ভাঙ্গন অব্যাহত আছে। নদ  নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে স্রোতের তীব্রতাও। এতে  ব্যাপক  রূপ ধারণ করেছে নদী ভাঙন। ফলে গত দু সপ্তাহে নদী ভাঙনে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চণ্ডিপুর, কাপাসিয়া, তারাপুর, বেলকা, হরিপুর ও শ্রীপুর সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী ফজলুপুর  ইউনিয়নের খাটিয়ামারীসহ  বিভিন্ন গ্রামের শতাধিক একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী জানান, প্রতি বছর বন্যায় হলদিয়া ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ বছর ও বন্যার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গত ৩ দিনের পানি বৃদ্ধি দেখে মনে হচ্ছে চলতি সপ্তাহে ব্যাপক বন্যা দেখা দিতে পারে।
সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের বাসীন্দা আব্দুল মালেক জানান, গত সপ্তাহের চেয়ে এ সপ্তাহে নদীর পানির চাপ বেশী। পানি বৃদ্ধির সাথে চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল গুলো প্লাবিত হচ্ছে।“
 সাঘাটার ভরতখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামছুল আজাদ শীতল জানান, ভরতখালী ইউনিয়নের পানি বৃদ্ধির সাথে নদী ভাঙ্গন বেড়ে যাওয়ায়  একটি গুচ্ছ গ্রাম খুব হুমকির সম্মুখিন হয়েছে।
ফুলছড়ি উপজেলার বাজে ফুলছড়ি গ্রামের বাসিন্দা মসলেউদ্দিন  জানান, যেভাবে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি হয়ে ফসলী জমি, পাট ক্ষেত, শাক-সবজি ক্ষেতে প্রবেশ করছে এতে আমরা আর্থীকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান  জানান, ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধা শহর পয়েন্টে বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা, ঘাঘট ও যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। তবে  এখনও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অপরদিকে বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) বিকেলে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুল মতিন ফুলছড়ি উপজেলার রতনপুর হইতে বালাসী ঘাট পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সংস্কার চলমান কাজ পরিদর্শন করেন এবং কাজের অগ্রগতি বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের রংপুর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এটিএম রেজাউর রহমান, গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান, গাইবান্ধা সিভিল সার্জন ডাক্তার এবিএম আবু হানিফ, গাইবান্ধা জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অফিসার ইদ্রিস আলী, ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জি এম সেলিম পারভেজ, ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু রায়হান সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *