বিচার বহিভূত হত্যাকান্ড কোন ভাবেই কাম্য নয় : সুলতানা কামাল

সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি, হেলাল উদ্দীন, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : দেশের বিশিষ্ট মানবাধিকার সংগঠক, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউণ্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এড.সুলতানা কামাল বলেছেন, বিচার বহিভূত হত্যাকান্ড কোন ভাবেই কাম্য নয়। তাই সে-টা সরকারের ভিতরের কোন সংস্থা করুন আর সরকারের বাইরের কোন চিহ্নিত সন্ত্রাসী করুক। বাংলাদেশের সংবিধান বিশ্বের অন্যতম একটি সুন্দর সংবিধান। আমাদের সংবিধানের ৩১ থেকে ৩৫ অধ্যায়ে পরিস্কার ভাবে মানুষের মৌলিক অধিকারের কথা বলা হয়েছে। আমরা এই দেশকে স্বাধীন করেছি অনেক রক্ত, অনেক আবেগ, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে। একটি সুসংগঠিত হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে নিরস্ত্র মানুষ জীবন দিয়ে এই দেশকে স্বাধীন করেছে। সেই স্বাধীনরাষ্ট্রে মানবাধিকার লংঘন হবে, বিচার বহিভূত হত্যা হবে আর আমরা কিছু বলবো না সে-টা হতে পারেনা।

এড. সুলতানা কামাল আরো বলেন, সারা পৃথিবী ঘুরে আমরা আজ বলে বেড়াচ্ছি, আমার দেশে আমরা দারিদ্র ভাতা, মাতৃত্ব ভাতা, বয়স্ক ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতা নিশ্চিত করেছি। অথচ একটি মহাল্লায় ১০ জন দরিদ্র মানুষ থাকলে তার মধ্যে মাত্র ১ জনকে এই ভাতা দেয়া হচ্ছে। বাকী ৯ জনকে আমরা বঞ্চিত করছি। যাদের মাধ্যমে এই ভাতার কার্ড বিতরণ করা হচ্ছে তাদেরকে দুর্নীতি, স্বজনপ্রিতি করার সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে, না হয় বিপদে ফেলে দেয়া হচ্ছে । এনিয়ে আমরা কেউ কথা বলছি না। দেশের এক লাখ মানুষ আজ যা বলছে আমরা কোটি কোটি মানুষ আজ তা সহজেই মেনে নিচ্ছি। কোন প্রতিবাদ করছি না। প্রতিবাদের সাহসও দেখাচ্ছি না। অথচ সংবিধান পরিস্কার ভাবে বলছে মানবসম্পদই এদেশের মূল চালিকাশক্তি, জনগনই সকল ক্ষমতার অধিকারী। আমরা আজ ছাড় ছাড় দিতে দিতে আমাদের সাংবিধানিক সেই ক্ষমতার কথা ভূলে গেছি।

তিনি বলেন, মানবাধিকার রক্ষায় আমরাদেরকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখতে হবে, চুপ থাকলে হবে না। মানবাধিকার রক্ষাকরা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। কোন ক্ষেত্রে মানবাধিকার লংঘন হলে সরকারকেই জবাবদিহি করতে হবে। এটা শুধু সংবিধানের কথা নয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনীতেও সেটা পরিস্কার ভাবে বলা আছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর সেই আত্মজীবনী অনেকবার পড়েছি। নিশ্চই প্রধানমন্ত্রীও তার আবেগ দিয়ে, চোখের পানি ফেলতে ফেলতে বঙ্গবন্ধুর সেই আত্মজীবনী পড়েছেন এবং পড়েন। মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর সেই কথা, সংবিধানের ধারার কথা স্বরন করিয়ে দিতে চাই। সোমবার বিকেলে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের স.ম আলাউদ্দিন মিলনায়তনে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউণ্ডেশনে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউণ্ডেশন সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি এড.আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উত্তরণ পরিচালক মো: শহিদুল ইসলাম, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু আহমেদ, প্রফেসর আব্দুল হামিদ, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আনিসুর রহিম, সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড.এস এম হায়দার, সিনিয়র আইনজীবী এড.আবুল হোসেন, সাংবাদিক কল্যান ব্যানার্জী, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী, ভয়েস অব সাতক্ষীরার সম্পাদক এম কামরুজ্জামান, আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের সরদার, এড, আজাদ হোসেন বেলাল, ভূমিহীন নেতা আলী নূর খান বাবুল, এড.শাহানাজ পারভিন মিলি, জোসনা দত্ত, ফরিদা আক্তার বিউটি,এড. আব্দুল্লাহ আল হাবিব, এড.ওসমান গণি, এড.আল মাহমুদ পলাশ, অধ্যাপক ইদ্রস আলী, সরদার কাজেম আলী, সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ প্রমুখ।

বক্তারা তাদের বক্তব্যে সাতক্ষীরার মানবাধিকার পরিস্থি তুলে ধরেন এবং মানবাধিকার লংঘনজনিত বিভিন্ন ঘটনা উল্লেখ করেন। এ ব্যাপারে তারা সানবাধিকারা সংগঠক এড.সুলতানা কামালের দৃষ্টি আকর্ষন করেন। সভায় সাংবাদিক, আইনজীবী, উন্নয়ন কর্মী, রাজনীতিবীদ, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *