বগুড়ায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ

 বগুড়া প্রতিনিধি, এম নজরুল ইসলাম, ২৫ মার্চ ২০১৮ (বিডি ক্রাইম  নিউজ ২৪) :  স্কুলের সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি ও উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ উত্তোলণ করে আত্মসাৎ করাসহ একাধিক অনিয়মের অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নের অন্তারপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোকলেসার রহমান ও সহকারী শিক্ষিকা রাণী খাতুনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির ছেলে রেজাউল করিম রনি। অভিযোগপত্রে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও এলাকাবাসীর স্বাক্ষর যুক্ত রয়েছে। এঘটনায় ৩ সদস্য বিশিষ্ঠ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়ে, উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল আলম জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমানিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অন্তারপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোকলেসার রহমান ও তার সহধর্মীনি একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রাণী খাতুন বিদ্যালয়ের নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে সেচ্ছাচারীভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছেন। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে এবং বিদ্যালয়ের কমিটির কাউকে অবগত না করে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ নিজ স্বাক্ষরে উত্তোলন এবং আত্মসাৎ করেছেন।

সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে শিক্ষকদের বেতন বিল ফরম শিক্ষা অফিসে জমা দেওয়া ও স্কুলের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে রেখে সাংসারিক কর্মকান্ড পরিচালনা করা, বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে ফসল ফলানো এবং নিজ বসতবাড়ী নির্মান করেন। এছাড়াও বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মানের পূর্বের টিনসেট ঘর ও বিদ্যালয়ের বিভিন্ন আসবাবপত্র নিজ প্রয়োজনে ব্যবহার করে আসছিলেন।

অভিযোগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং তার সহধর্মীনি বিরুদ্ধে ছুটি ছাড়াই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকাসহ বিদ্যালয় মেরামতের বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। বিদ্যালয়ের অনিয়ম ও দূর্নীতির সাথে অন্যান্য শিক্ষকরাও জড়িত আছে-কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই শিক্ষকের ভাই উপজেলা শিক্ষা অফিসে চাকরি করায় সে এবং তার সহধর্মীনি দুজনেই অতিরিক্ত ক্ষমতাবলে নিজ বাড়ির স্কুলে চাকরি করছেন এবং অবৈধ কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছেন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তবিবর রহমান বলেন, আমি বেশকিছুদিন যাবৎ অসুস্থ। আমার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন যাবৎ আমার কাছে থেকে কোন স্বাক্ষর নেয়না। সে কিভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন, তা আমার জানা নেই।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক ও তার সহধর্মীনি স্কুলের সরকারি সম্পদ বিদ্যুৎ, পানি, চেয়ার-টেবিল ও বিদ্যালয়ের ছাদে মুরগি ও কবুতরের ফার্ম নির্মান করেছেন। এতে করে বিদ্যালয়ের পরিবেশের অবনতি হচ্ছে। এছাড়াও নিজ এলাকায় চাকরি হওয়ায় ইচ্ছামত বিদ্যালয় পরিচারনা করছেন। অন্যান্য বিদ্যালয়ের তুলনায় অন্তারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান খুবই নাজুক বলা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *