ফরিদগঞ্জে নিজ বাড়ি থেকে উদ্ধারকৃত গলাকাটা লাশের রহস্য উদঘাটন

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি, কামরুজ্জামান, ১৮ এপ্রিল, ২০২২ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে আলোচিত ফরিদ উদ্দিন (২৫) হত্যা হত্যা কাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ঘটনার সাথে জড়িত নিহতের প্রতিবেশি সালাউদ্দিন ও রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ।

সোমবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান তিনি। পুলিশ সুপার বলেন, আইপিএল খেলা দেখছিলেন ফরিদ ও তার বন্ধুরা। তখন তার কাছে থাকা ১০ হাজার টাকা দেখতে পায় প্রতিবেশি সালাউদ্দিন। সেই টাকার লোভ এবং সালাউদ্দিনের বৌয়ের সাথে ফরিদদের পরকীয়া সম্পর্কের সন্দেহের জেরে বটি দিয়ে ফরিদকে কুপিয়ে হত্যা করে সালাউদ্দিন ও রহমান নামে ২ জন। আমরা দুজনকেই গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। খুনে ব্যবহৃত বটি দা আমরা উদ্ধার করতে পেরেছি। তাদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

গত ১৫ এপ্রিল রাতে ফরিদগঞ্জের ১৬ নং রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম কাউনিয়া ভূঁইয়া বাড়ী থেকে ফরিদ উদ্দিন ভূঁইয়ার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ঘটনাস্থলে সিআইডি, পিবিআই, গোয়েন্দা পুলিশসহ ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ একত্রিত হয়ে তদন্ত শুরু করে। পরদিন ১৬ এপ্রিল মৃত ফরিদ উদ্দিনের ভগ্নিপতি দুলাল চৌধুরী বাদি হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় ১টি মামলা করেন। মামলা নং-২৩/২২। আর সেই মৃত্যুর রহস্যই উদঘাটন করে ২ জনকে গ্রেফতার করে প্রেস ব্রিফিং করে পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ।

তদন্ত চলাকালীন তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায়। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে হত্যাকারীকে শনাক্ত করা হয়। পরে সালাউদ্দিন (৩৯) তার আরেক সহযোগী রহমান (২২ কে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যমতে হত্যা কান্ডের শিকার ফরিদ উদ্দিনের মানিব্যাগ ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত বটি দাসহ সংশ্লিষ্ট আলামত উদ্ধার করা হয়।

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানায়, হত্যাকান্ডের পূর্ব হতে রহমানের মোবাইল ফোন বন্ধ এবং ঘটনার পর হতে এলাকা হতে উধাও হয়ে যাওয়ার বিষয়টি তদন্তকারী টিমকে একধাপ এগিয়ে নেয়। গোপন সংবাদ এবং মোবাইল ট্রেকিং এ জানতে পারে সে জয়দেবপুরে অবস্থান করছে, দু’দিন সেখানে অবস্থান করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরে তার স্কীকারোক্তিতে বিস্তারিত জানা জায়।

তিনি আরো বলেন, হত্যাকান্ডে সালাউদ্দিনের ছেলে আরাফাত (৭) কে বিল্ডিং এর ভাঙ্গা সানসেড দিয়ে ঘরে প্রবেশ করিয়ে দরজা খুলতে সহযোগিতা নেয়। বয়স কম হওয়ায় তাকে মায়ের হেফাজতে দিয়ে দেয়। সালাউদ্দিন ফরিদ ও রহমান প্রতিবেশী, তারা এক সাথে চলাফেরা করত। ঘটনার দিন একত্রে চলমান আইপিএল খেলা দেখার সময় ফরিদের নিকট ১০হাজার টাকা দেখতে পায়। সে টাকা দুজনে সমান ভাগাভাগি করে নেয়। রহমানের আঙ্গুল ও পায়ের নমুনার সাথে মিলে পেয়েছে বলে তিনি জানান।

এসময় চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ফরিদগঞ্জ-হাজীগঞ্জ সার্কেল) সোহেল মাহমুদ এবং ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ হোসেনসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *