প্রতিটি জায়গাতেই দুর্নীতি হচ্ছে, লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করছি: দুদক চেয়ারম্যান

ঢাকা, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। প্রতিটি জায়গাতেই দুর্নীতি হচ্ছে, তবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় আমরা কিছুটা এগিয়েছি, দুর্নীতি হয়তো কিছুটা কমেছে, তবে এখনও প্রচুর দুর্নীতি রয়েছে। (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের পাঁচ বছর মেয়াদি (২০১৭-২০২১) কর্মপরিকল্পনার চলমান কার্যক্রমের বিষয়ে ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় দুদক চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘খাদ্য বিভাগের কর্মকতাদের সঙ্গে যোগসাজশে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে কিছু প্রতিষ্ঠান খাদ্যদ্রব্য মজুদ করেছে। এসব ক্ষেত্রে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন বলেও কমিশনে অভিযোগ এসেছে। এই অভিযোগটি অনুসন্ধান করা হচ্ছে।’ এসময় চাল ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দয়া করে অবৈধভাবে মজুদ করা চাল দ্রুত বাজারে ছেড়ে দিন, নইলে দুদকের মামলায় পড়তে হবে।’
দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘কমিশনের সাফল্য যেমন আছে, ব্যর্থতাও আছে, আবার কিছু অপরিপূর্ণতাও রয়েছে। কমিশনের অভিযোগ কেন্দ্রের হটলাইন ১০৬-এ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২ লাখ ৯ হাজার কল এসেছে। এটি মানুষের অভিযোগ জানানোর একটি প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ অভিযোগই কমিশন আইনের তফসিল বহির্ভূত। সাধারণ মানুষ দুর্নীতি দমন কমিশনের তফসিল সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না থাকায় এমনটি হচ্ছে।’ কমিশন শিগগির অভিযোগ গ্রহণ প্রক্রিয়ায় পয়েন্ট পদ্ধতি চালু করা নিয়ে ভাবছে বলে জানান তিনি।
দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘সরকারের প্রায় ২৫টি দফতরে কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক টিম কাজ করছে। এসব টিমের প্রতিবেদন পাওয়ার পর কমিশন প্রতিটি টিমের সুপারিশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে অবহিত করবে, যেন সরকার পদ্ধতি উন্নয়নের মাধ্যমে দুর্নীতির উৎস বন্ধ করতে সক্ষম হয়। একইসঙ্গে কমিশন সুপারিশগুলো গণমাধ্যমের সাহায্যে জনগণকে জানিয়ে দেবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করছি। কাউকেই ছাড় দিচ্ছি না। ভবিষ্যতেও ছাড় দেবো না।’
বেসিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। আমরা যা কিছু করব, তা আদালতের নির্দেশনার আলোকেই করব। বেসিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ নিয়ে ৫৪টি মামলা হয়েছে। আরও মামলা হতে পারে।’
দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে দুদক আগের চেয়ে অনেক সতর্ক রয়েছে জানিয়ে দুদকের এই শীর্ষ বলেন, ‘কর্মকর্তাদের বলে দেওয়া হয়েছে, অভিযোগ বেশি নেওয়ার দরকার নেই। যেগুলো নেবেন, সেগুলো যেন সঠিক হয়। আগে ঢালাওভাবে যেভাবে নোটিশ দেওয়া হতো, সেটা এখন হয় না।’
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুদক কমিশনার ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ, এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, সচিব ড. মো. শামসুল আরেফিন, চ্যানেল একাত্তরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু, একুশে টিভির প্রধান নির্বাহী মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, দৈনিক যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নইম নিজাম, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের নির্বাহী সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দিন প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *