নোয়াখালীতে ভুল চিকিৎসায় গৃহবধূর মৃত্যু

নোয়াখালী প্রতিনিধি, লূংফুল হায়দার চৌধুরী, ২২ মে, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালীর মাইজদী বাজারের হাসপাতাল রোড এলাকার মুন হসপিটালে ভুল চিকিৎসায় এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং এনথেসিয়া ডাক্তারকে আটক করে থানায় নিয়ে এসে পরে গভীর রাতে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গতকাল শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ভুল চিকিৎসার কারণে মৃত্যুর এই ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূ নাজমা আক্তার (২৫)। তিনি সদর উপজেলার ১নং চরমটুয়া ইউনিয়নের ধর্মপুর উদয় সাধুরহাট এলাকার এরাদ আলী ভূঞা বাড়ির সৌদি প্রবাসী মো.আবদুল্লার স্ত্রী।
নিহতের ভাই অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন জানান, গত তিন বছর আগে নিহত নাজমা একটি সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হলে তার হাতও পা ভেঙ্গে যায়। ওই দুর্ঘটনার তাঁর এক সন্তানও মারা যায়। তখন তার তার হাত-পায়ের ভাঙ্গা স্থানে চিকিৎসক পাত ব্যবহার করেন। কিছু দিন আগে সে এই নিয়ে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করলে এ জন্য তাকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেওয়া হয়।
একপর্যায়ে তার দেবর রহমানকে সাথে নিয়ে গতকাল শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে হসপিটালের দালাল মামুনের মাধ্যমে সে  মুন হসপিটালে ভর্তি হয়। অর্থোপেডিক চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বিল্লাল রাত সাড়ে ৮টায়  নাজমার অস্ত্রোপচারের সময় নির্ধারণ করেন। সেখানে কর্তব্যরত এনেসথেসিয়া চিকিৎসক আশিস কুমার দেবনাথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নাজমাকে অজ্ঞান করে।
এরপর নির্ধারিত সময়ের এক ঘন্টা আগে তড়িঘড়ি করে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাকে অপারেশ থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। অপারেশনের এক পর্যায়ে নাজমার জ্ঞান ফিরে আসলে সে স্ট্রোক করে অপারেশন থিয়েটারেই মারা যায়।

মুন হসপিটালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শহীদুল ইসলাম সায়েদ, অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেছেন,নিহত গৃহবধূর স্বজনেরা চার হাজার টাকা ভাড়ায় শুধু আমাদের অপারেশন থিয়েটারটা ব্যবহার করেছে। আর চিকিৎসক থেকে শুরু করে সকল কিছু তাদের ছিল।

নিহতের ভাই দিপু অভিযোগ করেন, এনথেসিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগে অপারেশন শুরু করায় নাজমা স্ট্রোক করে মারা যায়। নির্ধারিত সময়ের আগে অপারেশন শুরু করায় এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পরে এই মৃত ব্যক্তিকে তারা আবার ঢাকায় প্রেরণ করার নাটক সাজায়। হাসপাতালের দালাল মামুন অর্ধেক পথ যাওয়ার পর জানায় রোগী মারা গেছে।

নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা.মাসুম ইফতেখার জানান, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.সাহেদ উদ্দিন জানান, একজন ডাক্তারকে ভুক্তভোগীর স্বজনদের রোষানল থেকে রক্ষা করতে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *