নীলফামারীতে প্রশাসনের হুমকিতে বৃদ্ধ গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা

নীলফামারী প্রতিনিধি, মো. শাইখুল ইসলাস, সাগর, ২১ মে, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নীলফামারীতে কবুলিয়ত জমিতে বসত ঘর নির্মাণ করায় প্রশাসনের হুমকীতে ৬০ বছর বয়সের কছর উদ্দিন নামে এক ভূমিহীন অসহায় বৃদ্ধের গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার করার অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকায়। কছর উদ্দিন ওই এলাকার মৃত নজমুদ্দিনের ছেলে।

এলাকাবাসী সূত্রে যানা যায়, বিগত ১৫/০৭/১৯৯০ সালে ১২১৭৭ নং কবুলিয়ত দলিল মূলে রামনগর ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় বাজার সংলগ্ন ০১ খতিয়ানের ৩২১৭ দাগে ৪০ শতক খাস জমির লিজ পান মৃত কছর উদ্দিন। সেই থেকে ওই জমিতে ঘর বাড়ি নির্মাণ সহ ভোগদখলে ছিলেন তিনি। কিন্তু গুচ্ছগ্রাম করার জন্য পাশের খাস জমির সাথে তহসিলদার মোক্তার সহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এলিনা আকতার ও সদর সহকারী ভূমি কমিশনার তার জমিটিও অধিগ্রহণ করেন। এরপর বিভিন্ন সময় তহসিলদার, সহকারী ভূমি কমিশনার ও নিবার্হী অফিসার তার বাড়ি ভাঙ্গার হুমকী দিয়ে থাকে।
এলাকার নুর ইসলাম বলেন, মৃত কছর উদ্দিনের বসবাসের স্থান হিসেবে ওই জমিটি ছাড়া আর কোন জমিই নেই। তাই ওই জমিতে দুটি ঘর করে কোন রকমে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন তিনি। কিন্তু প্রশাসনের বার বার চাপের কারণে আজ তার মৃত। আমরা এলাকাবাসী হিসেবে এর সঠিক বিচার চাই।
মৃত কছর উদ্দিনের ছেলে শরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা অসহায় দরিদ্র মানুষ। মাথা গোঁজার জন্য তিল পরিমাণ জমিও নাই। কবুলিয়ত মূলে আমার বাবার লিজ পাওয়া ওই জমিতে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করে কোন রকমে জীবন যাপন করছি। কিন্তু গুচ্ছগ্রাম করার জন্য পাশের খাস জমির সাথে তহসিলদার, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সদর সহকারী ভূমী কমিশনার আমার বাবার নামে কবুলিয়ত জমিটিও অধিগ্রহণ করেন। মাথা গোঁজার ঠাঁই না থাকায় তহসিলদারের সাথে পরামর্শ করলে তিনি আমার কাছে ১ লক্ষ টাকা দাবী করেন। ধার দেনা করে ৫০ হাজার টাকা তাকে দেই। টাকা নেওয়ার পরেও শুরু হয় এই তিন সরকারী কর্মকর্তার হুমকী। বার বার বাড়ি ভাঙ্গার হুমকী ও জেল জরিমানার ভয়ে আমার বাবা আজ নেই। আমি আমার বাবার মৃত্যুর বিচার চাই।
৫০ হাজার টাকা গ্রহণ ও হুমকী দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রামনগর ইউনিয়েনের সহকারী ভূমী কর্মকর্তা বিষয়টি অস্বিকার করেন বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কাজ করা হচ্ছে।
এবিষয়ে সদর উপজেলা নিবার্হী অফিসার এলিনা আকতারের সাথে কথা হলে তিনি হুমকী দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তাকে অন্য দাগে জমি দেওয়ার কথা হয়েছিলো। এর মধ্যেই তিনি কি কারণে আত্মহত্যা করেছেন তা আমার জানা নাই এবং তহসিলদারকে টাকা দেওয়ার বিষয়য়ে আমাকে কোন অভিযোগ করেননি।
আত্মহত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রউপ বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে একটি ইউডি মামলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *