নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায় নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ইটভাটায় গাছ দিয়ে পুড়ছে ইট 

নরসিংদী প্রতিনিধি, কে.এইচ.নজরুল ইসলাম, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম  নিউজ ২৪) :  কৃষি জমিতে ইট ভাটা নির্মাণ হুমকির মুখে বসতবাড়ী ও ফসলি জমি, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কৃষি জমিতে ইট ভাটা নির্মান। মনোহরদী, পলাশ, শিবপুর, বেলাব, রায়পুরা ও সদরউপজেলার মাধবদী।

উপজেলার দাঙ্গা, গোপালদী, শুকুন্দী, রামপুর, পাটুলী, পড়চাঁপা, একদুরীয়া, চালাকচর, কাচিকাটা, পোড়াদীয়া, পুটিয়া, করিমপুর ও যোশর  ইউনিয়নের একটি ঘনবসতিপূর্ণ গ্রাম। এখানকার মানুষের জীবিকার প্রধান মাধ্যম কৃষি। শতকরা ৯০ জন লোক কৃষক এবং কৃষির উপর নির্ভরশীল।

এখানে বিধি বিধান অমান্য করে বসতবাড়ির মাঝে ও কৃষি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে ইট ভাটা। এলাকায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জন বসতি আবাসিক হলেও আইন অমান্য করে ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে। ইট ভাটার ধুঁয়ার কারনে ফলজ বৃক্ষ, জীব বৈচিত্র ধংস ও পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য মারাত্বক হুমকির মুখে পড়েছ।

স্থানীয়রা জানান, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩-এর বাস্তবায়ন ও সঠিক প্রয়োগের বিষয়টি ভাটা মালিক মানছেন না। ফলে পরিবেশ দূষণে নানা রকমের হুমকি রয়েছে এলাকাবাসীর। ২০১৩ সালের ২০ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকারের গেজেটের প্রণীত আইনে জন বসতিপূর্ণ এলাকায় ইটভাটা স্থাপন না করার বিষয়ে নির্দেশনা থাকলেও নরসিংদীতে তা মানছেন না ভাটার মালিকরা।

আইনে বাস্তবায়ন ও কার্যকরের জন্য প্রতিটি ইটভাটা আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতেই নির্মাণ ও পরিচালনার নির্দেশ রয়েছে। আইনের ধারা-৮, ১ নং উপ-ধারা অনুযায়ী আবাসিক, বাগান বা জলাভূমি, কৃষি জমি, ৩নং উপ-ধারা অনুয়ায়ী বিশেষ স্থাপনা, রেলপথ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল স্থল থেকে এক কিলোমিটার দুরত্বের মধ্যে কোন প্রকার ইটভাটা নির্মাণ বা স্থাপন করা যাবেনা।

মাটি সংগ্রহের ক্ষেত্রে কোন কৃষি জমির উপরিভাগ কেটে ওই মাটি ব্যবহার করা যাবে না। ইটভাটার অনুমতির ক্ষেত্রে পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের ছাড়পত্রের পাশাপাশি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, বন ও পরিবেশ বিভাগ, কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র গ্রহণ করতে হবে। ইট ভাটায় কোন অবস্থাতেই কাঠ, টায়ার এবং পরিবেশ দুষন হয় এমন কোন কিছু পোড়ানো যাবে না। আইন অমান্যকারীদের জন্য জেল ও জড়িমানা অথবা উভয় প্রকার দন্ড আরোপের নির্দেশ রয়েছে।

এলাকাবাসী  জানায়, ইটভাটা নির্মিত এলাকায় রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেসরকারি স্কুল, কমিউনিটি হাসপাতাল বাজারসহ বিভিন্ন ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এলাকাবাসী জানায়,MTT ইট ভাটাটি ছিল মনোহরদী উপজেলা শুকুন্দীর শিল্পপতি নুরুল ইসলামের। তিনি এই ভাটাটি চালাতে পারেনি বলে ২ বছর পূর্বে ভাড়া দিয়েছেন গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ার কাজল মিয়ার কাছে।

প্রায় ১৫ বছর দরে নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলা শুকুন্দী ইউনিয়ন সাভারদীয় গ্রামে গড়েউঠে MTT  ইটভাটাটি। প্রভাবশালী গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ার কাজল মিয়ার  ফলে পরিবেশ দুষণ সহ হুমকির মুখে পড়তে পারে আবাদী জমি ও বসতবাড়ি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে ইট প্রস্তুত করায় পরিবেশ দূষণের কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জীবন চরম ঝুঁকিতে পরিণত হতে পারে।

এছাড়াও দেখা দিতে পারে শিশু ও বৃদ্ধের শ্বাসকষ্ট জনিত নানা রকম সংক্রামক রোগ। ভাটার মালিক স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিয়ে চালাচ্ছেন এই ভাটাটি। স্থানীয়দের মতে,গড়ে ওঠা MTT ইটভাটাটির বিরুদ্ধে প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবে এবং আবাদী জমি  ও পরিবেশকে মারাত্মক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করবে।

এলাকাবাসী বলেন, ইট ভাটাটির কারনে স্কুলের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে যেতে সমস্যা হয়। এলাকার জনসাধারনসহ অভিভাবকরা ইট ভাটাটি বন্ধের দাবী জানিয়েছে। এব্যাপারে এলাকার সচেতন মহল জেলা প্রশাসকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *