নরসিংদীতে খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্তঃ গাছিরা

নরসিংদী প্রতিনিধি, কে.এইচ.নজরুল ইসলাম , ৩ জানুয়ারি, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম  নিউজ ২৪) : বৈচিত্র্যপূর্ণ ৬ ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। একেক ঋতুর রয়েছে একেক বৈশিষ্ট্য। তেমনি এক ঋতু শীত। এই ঋতুতেই দেখা মেলে শীতের। এই শীতে পাওয়া যায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু পানীয় খেজুরের রস। শীতের সকালে মিষ্টি রোদে বসে মিষ্টি খেজুরের রস পানের স্বাদই আলাদা। মৌসুমের শুরুতেই নরসিংদী জেলার  বিভিন্ন এলাকায় রস সংগ্রহে নেমে পড়েছেন গাছিরা। প্রতিদিন সকালে গাছিদের খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে দেখা যায়। বর্তমানে এই পেশার ওপর অনেকে নির্ভরশীল। তবে পূর্বের তুলনায় খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায়, ঐতিহ্য দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। এক সময় জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রচুর খেজুর গাছ ছিল। গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে হলে প্রথমে গাছের মাথার অংশ পরিষ্কার করতে হয়। পরে বিশেষ কায়দায় অল্প কেটে সাদা অংশ থেকে ছোট-বড় মাটির কলসি বেঁধে রস সংগ্রহ করা হয়। গাছিরা প্রতিদিন বিকেলে গাছে কলসি বাঁধেন। সকালে রস নামিয়ে কেউ কেউ বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় করেন। আবার কেউ কেউ গুড় তৈরি করেন। রস দিয়ে হয় মুখরোচক পায়েস ও পিঠা। শিবপুর উপজেলা পুটিয়া ইউনিয়নের জামতলা গ্রামের গাছি করম আলী  সাংবাদিকদের বলেন, আমি ২০-২৫ বছর ধরে খেজুরের রস সংগ্রহ করে আসছি। এবার ১২-১৫টি গাছের দায়িত্ব নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, সাধারণত একটি খেজুর গাছ রসের উপযোগী হতে ৫-১০ বছর সময় লাগে। রস পাওয়া যায় ২৫ বছর পর্যন্ত। প্রতিটি গাছ থেকে কী পরিমাণ রস পাওয়া যাবে, তা নির্ভর করে গাছির দক্ষতার ওপর। গাছিরা জানান, প্রতিটি গাছ থেকে দৈনিক তিন-চার কেজি রস সংগ্রহ করা যায়। কাচা রস প্রতি কেজি ৬০-৭০ টাকা দরে বিক্রি হয়। খেজুরের রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ খনিজ। রস টিনের ডিঙিতে ঢেলে বড় চুলায় জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয় পাটালি গুড়। ভাপা পিঠা জনপ্রিয় রসের পিঠা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *