ঝিনাইদহে ইমিটেশন গহনার কাজে ৮ শতাধিক পরিবারের কর্মস্থান রপ্তানী হচ্ছে ১৫ জেলায়

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, মোঃ জাহিদুর রহমান তারিক, ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম  নিউজ ২৪): ঝিনাইদহের মহেশপুর ইমিটেশন গহনার কাজে ৮ শতাধিক পরিবারের কর্মস্থান ১৫ জেলায় রপ্তানী। শহরের ১১টি করখানায় কাজ করে প্রায় আট’শ পরিবার কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে। বাংলাদেশের ১৫টি জেলায় মানসম্মত এ সব গহনা রপ্তানী করা সম্ভব হচ্ছে। বিপুল মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হওয়ায় সীমান্তবর্তী ঝিনাইদহ জেলার গ্রামীণ অর্থণীতির চিত্র বদলে যাচ্ছে।

পল­ঈ পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন পিকেএসএফ ও আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল ইফাদ’র আর্থিক এবং কারিগরী সহযোগীতায় মহেশপুরের বিভিন্ন গ্রামে তৈরী হচ্ছে ইমিটেশন গহনা। মহেশপুর উপজেলার বৈচিতলা, নওদাগ্রাম, জলিলপুর, যোগীহুদা, রামচন্দ্রপুর, বাথানগাছি সহ দারিদ্রপিড়ীত বিভিন্ন গ্রামে ইমিটেশন কারখানা গড়ে উঠেছে।

কারখানাগুলো পরিদর্শন করে দেখা গেছে, একনিষ্ঠ মনোযোগে ছাচে আর ডিজাইনে কেউ কেউ গলাচ্ছে নানা ধাতব পদার্থ, কারো মনোযোগ নকশাতে কারো বা হাতে চলছে গহনার চুড়ান্ত ডিজাইন কেউ বা পুঁথি সাজাচ্ছে কোথাও বা চলছে স্বর্ণের সোনালী কালারের রঙ এর কাজ । ভাঙ্গাচোরা মাটির বা টিনশেডের ঘরে ঘরে গ্রামের পর গ্রাম জুড়ে ইমিটেশন গহনা তৈরীর এমন মহাযজ্ঞ চলছে মহেশপুরে।

পৌরসভা সহ ৩টি ইউনিয়নে ১১টি কারখানার মাধ্যমে ভাগ্য বদলের এ গল্প শুরু হয়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার ফাঁকে কর্মসংস্থানের এমন সুযোগ হাতছাড়া করছে না। প্রতিদিন কাজ শেষেই পাচ্ছে নগদ টাকা, নিজের লেখাপড়ার খরচের পাশাপাশি পরিবারকেও সহযোগিতা করে চলেছে ক্ষুদে কারিগররা। বিশেষ ভাবে এ কাজে নারীদের অংশগ্রহণ লক্ষণীয়।

গ্রামবাসিদের ভাষ্যমতে সোনার গহনার বিপরীতে দেশে প্রতিনিয়তই বাড়ছে ইমিটেশন গোল্ড জুয়েলারীর চাহিদা। হাটবাজার, মেলা সহ নানা আয়োজনে এ গহনার পশরা সাজিয়ে বসতে দেখা যায় ব্যবসায়ীদের। কিন্তু প্রতিযোগীতামূলক বাজারে প্রশিক্ষণ না থাকায় মহেশপুরের কারখানায় ছোট গহনা বা মালামাল তৈরী করে টিকতে পারছিলনা কারিগররা। ছিল তাদের আর্থিক সংকটও।

এ অবস্থায় এগিয়ে আসে শিশু নিলয় নামে একটি সংগঠন। মহেশপুরের ইমিটেশন গহনা দেশের নওগাঁ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, সিলেট, লক্ষীপুর, কুমিল্লা, বগুড়া, রাজশাহী, যশোর ও ঢাকাসহ কমপক্ষে দেশের ১৫ টি জেলায় বিক্রি হচ্ছে। মহেশপুরের নওদা গ্রামের কারিগর শাহেদ আলী জানান, তার এই কারখানায় কাজ করে ৭ সদস্যের পরিবারের ব্যায় নির্বাহ করছি। একই কথা জানালেন জলিলপুর গ্রামের জসিম উদ্দিন।

বাথানগাছি গ্রামের অনার্স পড়ুয়া ছাত্রী মৌসুমি জানায় ইমিটেশনের বড় বড় গহনা তৈরী করেন তারা। এই ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাছিমা বেগম জানান, মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের লাভজনক ব্যবসার সুযোগ, দরিদ্রও অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর মুজুরী ভিত্তিক কর্মসংস্থান, পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে বিক্রয় ও আয় বৃদ্ধির লক্ষে পিকেএসএফ ও ইফাদ’র আর্থিক সহযোগীতায় ৩ বছর মেয়দী এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে অচিরেই এই প্রকল্প সাফল্যের মুখ দেখবে বলে তিনি মনে করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *