কোম্পানীগঞ্জ উত্তাল………

**বসুরহাট পৌরসভার সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে জেলা প্রশাসকের অপসারণ** অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার** টেন্ডারবাজদের বিচারের দাবীতে সড়ক অবরোধ** সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই আওয়ামীলীগ প্রার্থীর অবস্থান ধর্মঘট চলছে***

নোয়াখালী প্রতিনিধি, লুৎফুল হায়দার চৌধুরী, ০৩ জানুয়ারী, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুরো কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনী প্রতীকের শ্লোগান ছেড়ে জেলা প্রশাসকের অপসারন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে টেন্ডারবাজি ও পুলিশসহ শত শত কর্মচারীর চাকুরী দিয়ে শত কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের বিচারের দাবীতে বসুরহাট পৌরসভার আ’লীগের মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র ও আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে সড়ক অবরোধ ও অবস্থান ধর্মঘট ও মূহু মূহু শ্লোগানে উত্তাল বসুরহাট বঙ্গবন্ধু স্কয়ারসহ গোটা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা।

এ অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভের কারণে রবিবার বেলা ১১টা থেকে বসুরহাটের সাথে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ জেলার আভ্যন্তরীন সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় এবং জেলার বৃহত্তর বাণিজ্য কেন্দ্র বসুরহাট বাজারে চলছে অঘোষিত হরতাল। ১১টার পর থেকে এ বাজারে থাকা ১৫/২০টি সরকারি বেসরকারি ব্যাংক বীমায় লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রবিবার সকাল ১১টায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সভাকক্ষে জেলা প্রশাসক খোরশেদ আলম খান, পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন এর উপস্থিতিতে নির্বাচনী আইন শৃঙ্খলা সভা ও প্রার্থীদের সাথে মত বিনিময় সভায় আওয়ামীলীগ প্রার্থী মেয়র মির্জা আবদুল কাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেন নির্বাচনকে ভন্ডুল করার জন্য ফেনীর সংসদ সদস্য নিজাম হাজারী তার বাহিনী দিয়ে কোম্পানীগঞ্জের রাহাতের নিকট অস্ত্রের চালান পাঠিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এবং নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য।

জেলাসহ দেশের লক্ষ কোটি মানুষের প্রান প্রিয় নেতা মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নাম ভাঙ্গিয়ে শত শত কোটি টাকার টেন্ডাবাজি, চাকুরীতে নিয়োগ বাণিজ্য করে শত কোটি টাকা আত্মসাত, অবৈধ ইয়াবার চালান এনে যুব গোষ্ঠীকে ধব্ংস করা হচ্ছে। এসময় সভায় প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক খোরশেদ আলম খান, মির্জা আবদুল কাদেরের বক্তব্যে বাঁধা দিয়ে বলেন, এ বক্তব্য নির্বাচন আচরণ বিধিতে পড়ে না। তখন উভয়ের মধ্যে মৃদু বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে আবদুল কাদের মির্জা জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে নির্বাচন বানচালকারীদের সহায়তা ও প্রশ্রয় দাতা উল্লেখ করে সভাস্থল ত্যাগ করলে আওয়ামীলীগ, মুক্তিযোদ্ধা ও কমিশনার প্রার্থীরা সভাকক্ষ ত্যাগ করে বেরিয়ে যায় তারা হলের বাহিরে যাওয়ার সাথে সাথে উপজেলা পরিষদের সামনে থাকা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।

এ খবরের সাথে সাথে বাজার ও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাংক বীমায় গেইটে তালা দিয়ে লেনদেন বন্ধ করে দেয়। বসুরহাট বাস টার্মিনালে থাকা শতাধিক বাস সরিয়ে নেয়া হয়। এর পর পরই বসুরহাট বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে গিয়ে আবদুল কাদের মির্জা অবস্থান নিলে সেখানে তার সমর্থকরা অবস্থান ধর্মঘট শুরু করে। এ খবরের উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে একের পর এক মিছিল এসে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার লোকে লোকারন্য হয়ে যায়। বিকেল ৫টায় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম বসুরহাটে পৌঁছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বসুরহাট পৌর আওয়ামীলীগ ও মেয়র আবদুল কাদের মির্জার সাথে আলোচনা করে তিনি তাদের দাবীর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে বলেন, এভাবে দল ও দেশ চলতে পারে না। ১৬ জানুয়ারি নির্বাচনের পর এ সকল অভিযোগের ব্যাপারে দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাতীয় নেতা, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সাথে পরামর্শ করে তার দিক নির্দেশনা মোতাববক নিব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তারপর তার অনুরোধে নেতাকর্মীরা অবস্থান ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন। তিনি সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে শেখ হাসিনার ও ওবায়দুল কাদেররে নৌকার পক্ষে কাজ করার আহবান জানান। এ ব্যাপারে সভায় উপস্থিত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন জানান, এটা এমন কিছুই নয়। মেয়রের বক্তব্য নিয়ে সামান্য ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো: খোরশেদ আলম খাঁন জানান, তিনি আবদুল কাদের মির্জার বক্তব্যে বাধা বাধা প্রদান করেননি। তিনি তাকে বলেছিলেন তাঁর আর কিছু বলার আছে কিনা? তখন মেয়র আমাকে বলেন, আপনি আমার বক্তব্যে বাধা দিচ্ছেন। এ কথা বলে তিনি সভাস্থল ত্যাগ করেন। এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, কেন তারা আমাদের অপসারণ চাচ্ছে তা আমি নিজেই জানি না। এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত দোকান পাটসহ পুরো শহর বন্ধ রয়েছে এবং দাবী না মানা পর্যন্ত মন্ত্রীর ভাই মেয়র আবদুল কাদের মির্জা অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *