কালীগঞ্জে এবার আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন ধর্মঘট ! অবশেষে বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে অনশন ভঙ্গ, প্রেমিক উধাও

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, মোঃ জাহিদুর রহমান তারিক, ২৫ জুন, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) :  ২৪শে জুন রবিবার ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের একতারপুর গ্রামে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে সারা দিন ধরে অনশন করেছে প্রেমিকা রাজিয়া খাতুন (২১) নামের এক যুবতি। পরে বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে অনশন ভঙ্গ করে প্রেমিকা রিজিয়া। প্রতিশ্রুতি মোতাবেক যদি বিয়ে না করে তাহলে প্রেমিকের বাড়িতেই আত্মহননের হুমকি দিয়েছে প্রেমিকা। ঘটনাটি ঘটেছে কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের একতারপুর গ্রামে।

খবর নিয়ে জানা গেছে, বিয়ের দাবিতে অনশন করা প্রেমিকা রিজিয়া খাতুন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার একতারপুর গ্রামের শরিফুল ইসলামের মেয়ে। প্রেমিক সেনা সদস্য শিমুল হোসেন একই গ্রামের মোঃ শহিদের ছেলে। প্রেমিকাকে বিয়ের আশ্বাস দিলেও পরিবারের ভয়ে মেনে নিতে পারছে না প্রেমিক সেনা সদস্য শিমুল হোসেন নামের যুবক। রিজিয়া খাতুন শিমুলের কাছে একাধিক বার বিয়ের জন্য চাপ দিলে বিভিন্ন কৌশলে শিমুল এড়িয়ে যায় এবং তালবাহানা শুরু করে।

রিজিয়া বুঝতে পারে শিমুল তাকে বিয়ে না করার জন্য এভাবে এড়িয়ে যাচ্ছে তখন সে এ রকম সিদ্ধান্ত নেয়। রিজিয়া শিমুলের বাড়িতে অনশনের খবর পেয়ে শিমুল বাড়ি থেকে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে চলে যায়। এ সময় গ্রামের লোকজন জড়ো হলে মেয়েটি তার প্রেমের বিষয়টি তুলে ধরে। খবর পেয়ে বুধবার দুপুরে স্থানীয় লোকজন মেয়েটিকে বুঝিয়ে বাড়ি পাঠানোর চেষ্টা করে। মেয়েটি বাড়ি ফিরে যেতে অস্বীকার করলে প্রেমিক শিমুলের বাবা এবং আত্বীয় স্বজন রিজিয়া ও তার বাবার কাছে ১০ দিনের সময় নিয়ে রিজিয়াকে তার বাবার হাতে তুলে দেয়।

গ্রামবাসীরা জানায়, প্রেমিক শিমুলের পরিবার, প্রেমিকা রিজিয়ার পরিবার এবং এলাকার স্থানীয় গন্যমান্য লোকজনের উপস্থিতে রিজিয়াকে শিমুলের সাথে ১০ দিনের মধ্যে বিয়ে দেবে এমন প্রতিশ্রুতির সিদ্ধান্ত হয়। রিজিয়া পারভিন সাংবাদিকদের জানায়, এর আগে আমার একটা বিয়ে হয়েছিল সেখান থেকে শিমুলের কারনে ডিভোর্স হয়ে যায়। শিমুল আর আমার সম্পর্ক প্রায় ৫/৬ বছর। শিমুলই অনেক দিন ধরে আমাকে বার বার প্রেমের প্রস্তাব দেয় কিন্তু আমি আগে তাকে পাত্তা দিতাম না।

পরে সে আমাকে বিভিন্ন প্রলোভনে প্রলুব্ধ করে এবং বলে আমি সেনা বাহিনীতে চাকুরী করি আমি তো বেকার না। যদি আমার পরিবার তোমাকে মেনে না নেয় তাহলে আমি তোমাকে নিয়ে চলে যাবো। শিমুল আমাকে বলে আমি চেষ্টা করবো আমার পরিবার যাতে তোমাকে মেনে নেয়। সে আরো জানায়, শিমুল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সে আমাকে ঝিনাইদহ, কালীগঞ্জ ও যশোরের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতো এবং আমরা একই সঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি। প্রায় ৩/৪ বছর ধরে আমার সাথে একাধিক বার শারীরিক সম্পর্ক করেছে।

এখন যদি এই ১০ দিনের মধ্যে শিমুল আমাকে বিয়ে না করে তাহলে আমি শিমুলের বাড়ি যেয়ে আত্মহত্যা করবো। শিমুলের কথামত আমি শিমুলদের বাড়ি যেয়ে অনশন করি। সে আমাকে বলেছিল তুমি আমাদের বাড়িতে যেয়ে ওঠো তাহলে আমার পরিবার তোমাকে মেনে নিবে। আমি তার বাড়িতে ওঠার পর থেকেই শিমুল গা ঢাকা দিয়েছে। আমাকে যদি সে বিয়ে নাই করবে তাহলে সে এভাবে আমার জীবনটা কেন নষ্ট করে দিলো ? এখন হয় শিমুল আমার বিয়ে করবে আর না হয় আমি আত্মহত্যা করবো।

এখন ১০ দিনের মধ্যে বিয়ের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এটা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না, কারন বিয়ে যদি করবে তাহলে শিমুল পালাতক কেন আর ১০ দিন সময়ই বা কেন নেবে ? আমি আপনাদের মাধ্যমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছি। এ ব্যাপারে শিমুলের বাবা শহিদুলের সাথে কথা বললে তিনি জানায়, এ ব্যাপারে আমি আগে কিছু জানতাম না , রিজিয়া আমাদের বাড়িতে আসার পর বিষয়টি আমি জানলাম।

এখন এলাকার মানুষ ও রিজিয়ার পরিবারের নিকট থেকে ১০ দিন সময় নিয়ে রিজিয়াকে তার বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। দেখি ১০ দিনের ভিতর কোন সমাধান হয় কি না। এবিষয়ে কালীগঞ্জ থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান খান বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *