ইটভাটায় কাজ করে পড়াশুনা ও সংসার চালান অনার্স পড়ূয়া ছাত্র

নীলফামারী প্রতিনিধি, মো. শাইখুল ইসলাম সাগর, ৩০ মে, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : সুমন রায় । এক ভাই দুই বোন। অভাবের টানাটানি সংসার। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু নেই তাদের। ১১ বছর বয়স থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় ইটের ভাটায় কাজ করে নিজের পড়াশুনা চালানোর পাশাপাশি ৫সদস্যের একটি পরিবারের হাল ধরে রেখেছেন ইটের ভাটার উপার্জনে।

সে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের ডুগডুগী গ্রামের প্রভাত রায়ের ছেলে। সৈয়দপুর সরকারী কলেজের ইতিহাস বিভাগের ২য় বর্ষের অনার্স পড়ূয়া মেধাবী ছাএ।

সে ইটের ভাটায় একদিন কাজ না করলে তার পরিবার অনাহারে অর্ধাহারে থাকতে হয়। নিজের জমি নেই, অন্যের ভিটায় ২টি কুঁড়েঘড়ে তাদের বসবাস। বাবা দিনমুজুর মা গৃহিনী। তাকে পড়াশুনা করানো ও পরিবারের যাবতীয় খরচ চালানো দিনমুজুর বাবার পক্ষে সম্ভব নয়। নিজের পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য ও সরকারী চাকরী করার আশায় মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সে ইটের ভাটায় কাজ করেন। শুধু কলেজের প্রয়োজনে বছরে দু’একবার বাড়ীতে আসেন। নতুবা আসার সুযোগ ও হয়না।

সুমন রায়ের সাথে কথা হলে সে বলেন, আমার বয়স যখন ১১বছর তখন থেকে সংসারের অভাব অনটন মেটাতে ও নিজের পড়াশুনার টাকা জোগাড়ের জন্য সারা বছর দেশের বিভিন্ন জেলায় ইটের ভাটায় কাজ করি। ইটের ভাটার পরিশ্রমে আমার ৫ সদস্যের একটি পরিবারের হাল ধরে রাখতে পারছি। ইটের ভাটার পরিশ্রমের টাকা দিয়ে আমি অনার্স ২য় বর্ষ পর্যন্ত পড়তে সক্ষম হয়েছি। আমার আশা, আমি এভাবে কষ্ট করে পড়াশুনা শেষে একটি সরকারী চাকরী করব।

জানতে চাইলে সোনারায় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, পরিবারটি গরীব। সুমন রায় ছোট বেলা থেকে ইটের ভাটায় কাজ করে ও যা পারিশ্রমিক পায় তা দিয়েই নিজের পড়াশুনা চালায় এবং নিজের পরিশ্রমের টাকা দিয়ে এ যাবত অনার্স পর্যন্ত পড়তে পারছে। তার বাবা মার পক্ষে সুমনকে লেখাপড়া করানো সম্ভব নয়। তবে আমি যতটুকু পারছি পরিবারটিকে সাহায্য সহযোগিতা করে আসছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *